বিজয় নামক সুরের টানটা যে কতখানি তীব্র, আজ তা বুঝেছি। যখন হৃদ-সুতোয় টানটা লেগেছে বিদেশের মাটিতে থেকে।
বিজয় নামক শব্দের মাঝে যে কতখানি গভীরতর একটা অনুভূতি লুকিয়ে আছে, আজ তা বুঝেছি। যখন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটরিতে শিকল-বন্দী হয়ে বিজয়ের গান শুনেছি।
এখানে আমার দেশী বিজয়ের গান পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে শুনতে পারিনা। আমার বাঁধ ভাঙা বিজয় উল্লাস ভীনদেশিদের ঘুমন্ত চোখে নিশ্চিতভাবেই তীরের মত বিঁধবে। গলা ছেড়ে একটা চিৎকার দিয়ে বিজয়ের আনন্দটা নেয়া সম্ভব নয় এখানে। তবুও অন্তর-মাঝে বারবার বিজয়ের সুর বাঁজে। নিজেকে সামলানো বড্ড দায়।
আজ বিজয় দিবস। প্রতি বছর এই সময়টাতে আমার দেশের প্রতিটি খন্ডে বিজয়ের গান বাঁজে। কি রাত, কি দিন। বিজয়ের আনন্দ চলে সারারাত আর সারাদিন। বাঁধা নেই কোথাও। বরং সবাই স্বতস্ফুর্তভাবে অংশ নেয় বিজয় উল্লাসে। কীযে এক অনুভূতি লুকিয়ে আছে তার মাঝে, আজ বুঝি। দেশে থাকলে হয়তো আমিও আজ সকলের কাতারে মিশে যেতাম। জন্মের পর একটা বিজয় দিবসও দেশের বাইরে কাটাইনি। আজ কাটাচ্ছি। কেন যেন আজ আর নিজেকে মানাতে পারছিনা।
বিজয়... তুমি কী...!!
১২ টা বাজার সাথে সাথে ইউটিউবে দেশের গান সার্চ দিয়েছিলাম। এতোটাই আবেগী ছিলাম যে কোনটা ছেড়ে কোনটা শুনবো, ঠিক করতে পারছিলাম না।
অবশেষে গান বাজলো...
সব কটা জানালা খুলে দাও না,
আমি গাইবো গাইবো বিজয়েরই গান...
মুহূর্তেই পাশের রুম থেকে একজন আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। মৃত্তিকার টানে সেও ঘুম ছেড়ে গান দেশের শুনতে এসেছে।
ওহ বিজয়... তুমি কী...!!
সত্যিকার অর্থে বিজয়ের আনন্দ শুধু তারাই বোঝে, যারা বিজয়ী।
কতখানি দেশপ্রেম থাকলে দীর্ঘ নয়মাস রক্ত দিয়ে যুদ্ধ করা সম্ভব, তা ভাবতে গেলে শ্রদ্ধায় প্রতি মুহূর্তে মাথা নত হয় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি। আমার সমস্ত আবেগ তাদের চরণ ছুঁয়ে যাক।
লেখাটা যখন লিখছি, তখন স্থানীয় সময় রাত পৌনে চারটা, ঘুম আসছেনা একটুও। হয়তো এই আজ আর ঘুম আসবেও না। বারবারই কানে ভেসে আসে,
আমার সোনার বাংলা,
আমি তোমায় ভালবাসি...
No comments