default | grid-3 | grid-2

Post per Page

প্রথম শুরু

ক্লাস টেন...
বাড়ি থেকে অনেক দূরে।
উসমান স্যারের বাসায় থেকে তখন আমি পড়াশুনা করছি।
খুব ভালবাসতেন বলে গ্রাম থেকে স্যার আমাকে শহরে নিয়ে আসেন।
তার সীমাহীন মারের বদৌলতে সবসময় আমার রেজাল্ট একটু ভালোই হতো।

বিন্তি আপু...
এক ক্লাস নিচে থাকা এক ছোট ভাইয়ের দুইমাত্র বড় বোন।
আমারো বড় বোন।
কারন সে তখন ছিলো এস এস সি পরীক্ষার্থী।
উসমান স্যার খুব ভালো পড়াতেন বিধায় গার্লস স্কুলের স্টুডেন্ট হয়েও সে বয়েজ স্কুলের স্যারের কাছে পড়তে আসতো।
যেহেতু সে অন্য স্কুলের, এবং সে এস এস সি পরীক্ষার্থী, সেহেতু আমাদের অংক পরীক্ষার খাতাটা স্যার তাকে দিয়ে চেক করালেন।
স্যারের এই কাজটা ছিলো আমার জন্য বাঁশঝাড় লাগানোর প্রথম ধাপ।
অংক খাতা দেখার পড়ে তার মাঝে এক বিশেষ পরিবর্তন আসে।
খাতা দেখে একবার, আমার দিকে তাকায় তিনবার।
সেই থেকেই শুরু...
আর পিছু ছাড়ে না...
মনেহয় সেদিন আমি অংক খাতায় প্রেমপত্র লিখেছিলাম...
নাহয় এমন কেন হবে... !!!
কারণে অকারণেই স্যারের কাছে বলে সে আমায় বাইরে নিয়ে যাতো।
কবিতার বই, প্রেম-পিরিতির বই, উপন্যাস, আরো কতো কি কিনে দিতো তা এখন মনে নেই।
স্যার কিছু মনে করতেন না। কারন সে তো আমার বড় আপু...
আর, আমিও কিছু মনে করতাম না।

হঠাৎ প্রেমপত্র...
সাথে গোলাপ ফুল, আর পাথরের মুর্তি...
ভিলেন হয়ে গেলো স্যারের ৪ বছরের ছেলে।
পাথরের মুর্তিটা হাতে নিয়ে নাচতে নাচতে সে গিয়ে দাড়ালো স্যারের কোলের কাছে।
স্যারের একটু সন্দেহ হলো।
তবে বেশি একটা কেয়ার করলেন না।
পরের দিন স্কুল থেকে ফিরে এসে দেখি আমার ডেস্ক থেকে বিন্তি আপুর দেয়া সব গিফট স্যারের বৌয়ের শোকেসে।
প্রেম না করেও প্রেমিক পুরুষ হয়ে গেলাম মুহূর্তেই।
স্যার আমাকে তেমন কিছুই বলেনি।
তবে বিন্তি আপুর খবর করে ছাড়লো। সব দোষ তার উপরে উঠিয়ে দিলো আমার উসমান স্যার।

এখানেই শেষ না।
প্রেমের মহাকাব্য শুরু হলো নতুন করে।
স্যার আমাকে বললেন, বিন্তি আপুকে যেন আমি খালামনি বলে ডাকি ।।
আর, বিন্তি আপুকে বলে দিলেন, আমি হলাম তার হীরু মামা...
গল্পটা এখানেই শেষ হলে খুব ভালো হতো।
তবে, তা আর হলো না।
আমি শুধু বিন্তি আপুরই মামা হয়ে থাকতে পারিনি। পুরো স্কুলের হীরু মামা হয়ে গেলাম...
ক্লাস সিক্স টু টেন, যে যখন যেখানেই আমাকে দেখতো, সবাই হীরু মামা বলে ডাকতো।
শুধু তাই না, স্যার / ম্যাডামরাও মামা বলে ডাকতো।
ক্লাসে পড়ানোর সময় ম্যাডাম বলতো... "হীরু মামা, পড়া বলেন"
লজ্জায় সামনের বেঞ্চে না বসে পিছনের বেঞ্চে বসতাম।
কোন কোন স্যার এসে বলতেন, "হীরু মামা কী আজ স্কুলে আসেননি?"
কই যাই... !!!
উসমান স্যার আর তার ছেলে... দুই বাপ-পুতে মিলে আমাকে মামা বলে ডাকতো।
এটাও কি সম্ভব???
সবাই মিলে আমাকে বাঁশের প্রকারভেদটা হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিতো সেসময়।

যাই হোক...
বিন্তি আপুর সাথে সম্পর্কটা সেই যে গেলো, আর ফিরে এলো না।
মামা-খালা সম্পর্কের মাঝেও তাকে আর খুঁজে পাইনি কখনো।
তবে এতটুকু সিওর, এতোদিনে মনেহয় আমি নানাভাই হয়ে গেছি।

No comments

Error Page Image

Error Page Image

Oooops.... Could not find it!!!

The page you were looking for, could not be found. You may have typed the address incorrectly or you may have used an outdated link.

Go to Homepage